আমাদের আঙিনার ঘ্রাণ

আঙিনার পূর্ব পার্শ্বে ছিল একটা গন্ধরাজ ফুলের গাছ। ভোরবেলাটা ছিল গন্ধরাজের সুবাস ছড়ানো। খুব সকালে গোয়াল ঘর থেকে গরু মহিষ বের করে বাইরে খুলিতে নেওয়ার সময় আঙিনায় গোবর পড়ত। এরপর পরই আঙিনা ঝাড়ু দেওয়া শুরু হতো। এক দেড় হাজার স্কয়ার ফিটের আঙিনা। ঝাড়ু দেওয়ার আগে ধূলা যেন মরে এই উদ্দেশ্যে পানি ছিটানো হতো। Continue reading “আমাদের আঙিনার ঘ্রাণ”

নানী বাড়ি ইয়েস, নানাবাড়ি নো

শৈশবের সুজালপুর, অম্লান স্মৃতি। সবচেয়ে অবাক বিষয় আমার এখনো লাগে, এই পরিবারে নানাবাড়ি শব্দটা নাই। সকলেই নানী বাড়ী যায়।
।।
পারিবারিক সম্পর্কগুলিকেও বিশেষ ভাবে সম্বোধন করা হয়। স্কুল শুরু করার পর থেকে জানা শুরু করলাম, মানুষে বড় চাচা বলে, কেউ কেউ বলে কাকা, আমরা বলি ‘বড় আব্বা’। আমরা, বিশেষ করে আমরা চার ভাই বোন ছিলাম সবচেয়ে পৃথক সম্বোধন নিয়ে, মানে সেভাবে শেখানো হয়েছিল আর কি। Continue reading “নানী বাড়ি ইয়েস, নানাবাড়ি নো”

রাবেয়া খালা – প্রথম মৃত্যুর ঘ্রাণ

বড়মার নাম ছিল সাইদা বেগম। তাঁর বোন ছিলেন রাবেয়া খালা। তখন 1978 বা 1979 সাল হবে। আমার মা’র সাথে নিউটাউন আর ঈদগাহবস্তির মাঝামাঝি একটা ক্লিনিকে অনেকবার গিয়েছি, এমনটা মনে পড়ে। ঐখানে তখন দেলোয়ার ডাক্তার (ডক্টর দেলোয়ার হোসেন, জেনারেল সার্জারি) ক্লিনিক খুলেছিলেন। ঐ ক্লিনিকে রাবেয়া খালা ভর্ত্তি ছিলেন। আম্মা প্রায় প্রতিবারই আমাকে নিয়ে যেতেন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা রাবেয়া খালা আমাদেরকে দেখলে খুব খুশী হতেন। Continue reading “রাবেয়া খালা – প্রথম মৃত্যুর ঘ্রাণ”

খেলনার নাম পাওয়ার হাউজ

যেখানেই যাও মাগরিবের আযানের আগে বাড়ীতে ফিরতে হবে। এটা ছিল শিশুদের জন্য সান্ধ্য আইন। খেলার মাঠ থেকে ঘরে ফিরে প্রথম কাজ ছিল হাত মুখ ধোয়া। আর যারা একটু বড় তারা বায়োজিদ হারিকেন মুছতে বসতে হতো, কাজের লোক না থাকলে। হারিকেন মুছে তাতে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালাতে বাড়ীতে সন্ধ্যা নামতো। মাটিতে পাটি (আমরা বলতাম শপ) বিছিয়ে পড়তে বসে মশা, আলোর পোকা, সবুজ ঘাস ফড়িং আর একটু দূরের জোনাকি পোকারা সাক্ষী আমি চিৎকার করে পড়তাম ঠিকই তবে নজর থাকত ঐ পোকা মাকড়ের দিকেই বেশী। Continue reading “খেলনার নাম পাওয়ার হাউজ”

ডানপিটে দিনগুলি

আকস্মিক এবং চমকপ্রদ। ঘটনাটি যখন ঘটতে শুরু করল তার ইমিডিয়েট আগে কোথায় ছিলাম আর কিভাবে আমি এই ঘটনার মুখোমুখি হলাম কিংবা চারদিকের আবছা আলোয় মোড়া এই ঘটনাটি ঠিক কিভাবে আমার সামনে উদয় হলো, ঘটনার আকস্মিকতায় স্মৃতি একদম ফকফকা। খেয়াল করে দেখলাম চোখের সামনে যা ঘটছে তা হলো একটি পাঁচটণী ট্রাকের পেছনে ঝুলে আছি আর উপর থেকে শক্ত দুটি হাত আমাকে ধরে টেনে তুলছে। আর আমার পা গুলো শূণ্যে ঝুলছে। ভয়ে আতঙ্কে মুখ থেকে আমার বেরিয়ে এল তীক্ষ্ণ চিৎকার। উপরে তাকাতে চোখে পড়ল সন্ধ্যার আকাশের গায়ে দুটো মাথা। এসময় ট্রাকের গতি বেড়ে যাওয়া শুরু করল। মাথাটা হঠাৎ পরিষ্কার হয়ে গেল। ওরা আমাকে টেনে ট্রাকে পূরোপুরি তুলে ফেলতে না ফেলতেই বুঝে ফেললাম আমাকে ছেলেধরা ধরেছে। Continue reading “ডানপিটে দিনগুলি”